অনার্সে সিজিপিএ মাত্র ২.৬৮ পেয়েও যেভাবে জার্মানি আসলাম…

পীযূষ কুরী »

বাংলাদেশে আমার ভার্সিটির রুমমেট চারজনের মধ্যে তিনজনই প্রায় একবছর আগে চলে আসে জার্মানি। মনে মনে ভাবতে থাকি আমাকেও যেতে হবে স্বপ্নের দেশ জার্মানি…

কিন্তু অনার্সের ফল একটু খারাপ থাকায় মনের ভেতর হাল্কা একটু শঙ্কাও থেকেই যায়। তবে এক ধরনের আত্মবিশ্বাসও ছিল… আমি পারবোই…

নিরাশ না হয়ে কাজ করে যেতে থাকি… জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে যেমন : ডাড, ইউনিএসিস্ট, ফিন্টিবা প্রভৃতি সম্পর্কে ধারণাও নিতে থাকি।

ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর চলে আসি ঢাকায়, IELTS-এর প্রিপারেশন নেওয়ার জন্য।

আমার ভার্সিটির বড় ভাইদের সবার রেজাল্ট অনেক ভালো, অপর দিকে আমার রেজাল্ট মাত্র ২.৬৮! কোনোরকমে পাস করা যাকে বলে আরকি! এমন অবস্থায় আমার একটাই রাস্তা, IELTS। এখানে ভালো করতেই হবে। অনেক পরিশ্রম করলাম, মাঝে ডেঙ্গু জ্বর হয়, তাই IELTS-এর শিডিউল পিছাই। যাক, অনেক পরিশ্রমের পর রেজাল্ট আসে ৬.০০ (L-6, R-6, W-6.5, S-6)।

আবার একটা হতাশা চলে আসে, কেউ কেউ আবার IELTS-এর জন্য বলতে থাকে, আমি সিদ্ধান্ত নিই, যা আছে, তা দিয়েই চেষ্টা করবো, যদি না হয়, ১ বছর বিরতি নিয়ে, নতুন করে শুরু করবো।

অনেক কঠিন কাজ ছিলো ইউনিভার্সিটি সার্চ করা। আমাকে জার্মানি থেকে কিছু আইডিয়া দিচ্ছিল ভাইয়ারা, অপরদিকে আরেকজন ভাই আমার সাথে রাত জেগে জেগে ইউনিভার্সিটি খুঁজতে থাকেন।

বেশ কয়েকটা ইউনিভার্সিটিতে মেইল করি, আমার পড়ার ইচ্ছা জানাই, রেজাল্টের কথা জানাই। সব যায়গা থেকে নেগেটিভ রিপ্লাই আসে।

এভাবে একদিন হুট করে daad.de-তে প্রথম ইউনিভার্সিটি পেয়ে যাই, যেখানে ব্যাচেলরের রেজাল্টের রিকোয়ারমেন্ট ছিলো না। সাথে সাথে এপ্লাই করতে বসি। টানা ২ দিন পর, সব ডকুমেন্টস আপলোড দিয়ে, এপ্লাই শেষ করি। কেন জানি মনে হচ্ছিলো এখান থেকে অফার লেটার পাবো, কিন্তু যাওয়া হবে না। টিউশন ফি ছিলো প্রতি সেমিস্টারে ১৫০০ ইউরো!

আমি এপ্রিলে এপ্লাই করি এখানে, আর রেজাল্ট আসে জুনের ২ তারিখ, অফার লেটার পাই 😁😁। প্রথম অফার লেটার!

এই ফাকে খুঁজতে খুঁজতে আরও দুটো ইউনিভার্সিটি পাই, সেগুলোতে এপ্লাই শেষে বাড়িতে ফিরে আসি মে মাসে, হাতের সবগুলো কাজ শেষ, এখন সব ভগবানের ইচ্ছা… সবই গত বছরের ঘটনা…

ইউনিএসিস্ট অনেক দেরি করে মেইল দেয়, ডকুমেন্টস ফরওয়ার্ডের। যাক সেটার ২ সপ্তাহ পরে, কাসেল থেকে অফার লেটার পাই। এবার আমার গন্তব্য নিশ্চিত। আগের অফার লেটার পাওয়া ইউনিভার্সিটির জন্য একটু খারাপ লাগে। তবে যেখানে আমার যাওয়া অনিশ্চিত, কেউ কেউ বলেছে, আমার জার্মানি আসা হবে না এই রেজাল্ট দিয়ে, ইউনিভার্সিটি খুঁজে না পাওয়ার টেনশন, সেগুলার কাছে, তা কিছুই ছিল না।

তবে আরেকটা স্ট্রাগল বাকি ছিলো, ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া। টানা ৩৫টা রাত না ঘুমিয়ে, অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাই জার্মান অ্যাম্বাসির। সেটা ছিল ২০ আগস্ট। এরপরে ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাম্বাসি থেকে মেইল আসে, সরাসরি ভিসা কালেক্ট করার!

আর এভাবেই চলে আসি ব্রেড আর বিয়ারের দেশ, ডয়েচল্যান্ডে 🙂

পীযূষ কুরী » মাস্টার্স শিক্ষার্থী; ইকোনমিক বিহ্যাভিয়ার অ্যান্ড গভর্নেন্স; ইউনিভার্সিটি অব কাসেল; জার্মানি

7 thoughts on “অনার্সে সিজিপিএ মাত্র ২.৬৮ পেয়েও যেভাবে জার্মানি আসলাম…

  • 02/05/2020 at 6:35 AM
    Permalink

    ssc commerce theke 2.63. hsc humanities theke 3.08 Ielts score over all 6…i study degree 3 years.. it’s 3 years course.. ei result ta kiser khetre possible bechelor or masters… pls inform me…?

    Reply
  • 16/05/2020 at 9:03 PM
    Permalink

    আপনি কি স্কলারশিপের বাইরে ফান্ডিং পেয়েছিলেন? যদি পেয়ে থাকেন তাহলে ফান্ডিং পাওয়ার জন্য করণীয় কি?

    Reply
  • 29/05/2020 at 10:15 AM
    Permalink

    Kon kon university te apply kore offer latter peyeche sei 3 ta university er list dile kritoggo thakbo

    Reply
  • 29/05/2020 at 10:17 AM
    Permalink

    Kon kon university theke pejush vai offer latter peyechen tar list ta jodi ektu pawa jeto tahole onek kritoggo thakbo

    Reply
  • 02/10/2020 at 9:43 PM
    Permalink

    BRO,I HAVE 4.94 IN S.S.C, 4.20 IN H.S.C THEN 3.15 IN C.G.P FROM. HOW CAN I APPLY VARIOUS VARSITY? I WAN’NA COME IN GERMAN.

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *