ক্যারিয়ার পাথওয়ে (সিরিজ ০১): জার্মানির শিক্ষাব্যবস্থা🇩🇪 vs বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা🇧🇩
আমাদের মোটামুটি সবার-ই একটা স্বপ্ন থাকে জার্মানিতে মাস্টার্স অথবা ব্যাচেলর শেষে পড়াশোনা রিলেটেড জব করে লাইফ টাকে জার্মানিতেই সেটেল করব। তবে আমার মতো অনেকের-ই বাংলাদেশের সাথে জার্মানির পড়াশোনার খাপ খাইয়ে নিতে কিছু বেগ পোহাতে হয়। ২০১৯ সালে বায়োমেডিক্যাল সায়েন্স (মাস্টার্স) কোর্সে জার্মানিতে আসি এবং লাইফে প্রথম প্যাথোফিজিওলোজি কোর্সে ফেইল করি। বাংলাদেশে ৩.৭০ সিজিপিএ নিয়ে ব্যাচেলর শেষ করা ছাত্র যখন জার্মানি এসে প্রথমবারের মত ফেইল করে, তখন সব আশা হতাশায় পরিনত হয়। পরবর্তীতে ফেইল করার কারণ খুজতে গিয়ে বুঝতে পারলাম, ভুল টা ছিল আমার ঠিকভাবে বুঝতে না পারা। আসুন ব্যাখ্যা করা যাক-
বাংলাদেশের ১৬ বছরের পড়াশোনার সিস্টেম আমাকে শিখিয়েছে পরীক্ষার আগে শীট মুখস্থ করো আর পরীক্ষার খাতায় যত ভাল বমি করতে পারবা তত-ই ভাল তোমার সিজিপিএ। আমাদের ১-৩ পৃষ্ঠা লিখতে হত ৪ মার্কস এর একটি প্রশ্নের জন্য। মানে আমরা বুঝতাম কম, কিন্তু লিখতে হত বেশি। তাই ভাল সিজিপিএ- এর জন্য মুখস্থ বিদ্যার বিকল্প ছিল না।
জার্মানিতে প্রতিটা কোর্স এমনভাবে সাজানো হয় যেখানে আপনাকে পড়তে এবং বুঝতে হবে বেশি, কিন্তু লিখতে হবে কম। একটা প্রশ্নের উত্তর আপনাকে ৩ পৃষ্ঠার পরিবর্তে মাত্র ২-৩ লাইনের মধ্যেই উত্তর লিখতে হবে। মানে সত্যি যদি আপনি টপিক টা বুঝতে পারেন তাহলে অবশ্যই ২ লাইনে উত্তর করা সম্ভব, আর প্রফেসর সেটা খুব ভাল করেই জানেই বলে প্রশ্ন টাও সাজায় ওই প্যাটার্নে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র বা ক্লাসের টপারের শীট পড়ে পাস করার মত সহজ উপায় জার্মানিতে নেই। এখানে আপনাকে টপিক খুব ভাল ভাবে বুঝতে হবে, রিসার্চ আর্টিকেল পড়তে হবে, আর প্রফেসর ক্লাসে যা বলেন তা নোট করতে হবে।
আর এখানেই জার্মানি আর বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার পার্থক্য। যদিও এই সিস্টেম থেকে বের হতে আমার কিছুটা সময় লেগেছিল।
আমরা যারা শুরুতেই কোনো কোর্সে ফেইল করে হতাশায় ডুবে যাই, ভাবি আদৌ শেষ করতে পারব কিনা, জব পাবো কিনা আরও নানান কিছু। তাহলে বলি, আমি যদি প্রথম পরীক্ষায় ফেইল করার পর নিজের ভুল শুধরিয়ে শেষ পর্যন্ত মাস্টার্স থিসিস-এ ১.০ (জার্মান গ্রেড) পেয়ে মাস্টার্স শেষ করতে পারি, তাহলে আপনাদের পক্ষেও সম্ভব।
বি:দ্র: আসছে….
ক্যারিয়ার পাথওয়ে (সিরিজ ০২): কিভাবে স্টাডি চলাকালীন নিজেকে জবের জন্য প্রস্তুত করব এবং করণীয় জানতে দেখুন
Osman Goni
PhD Researcher
Uniklinik RWTH Aachen, Germany